গোপনাঙ্গে লুকিয়ে কোকেন পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন এক নাইজেরীয় নারী। ডেভিড ব্লেসিং (৩০) নামে ওই নারীকে গতকাল সোমবার রাতে বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়। তবে তাকে আটকের পর থেকে আতংকে আছে বিমানবন্দর গোয়েন্দা পুলিশ।
জানা গেছে, সোমবার রাতে ভারতের মুম্বাই থেকে কলকাতা সফর করছিলেন ব্লেসিং। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জেট এয়ারওয়েজের একটি বিমান থেকে তাকে আটক করে কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশ।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, বিমানবন্দরে প্রাথমিক তল্লাশিতে ২০টি কোকেনের প্যাকেট পাওয়া গেছে ওই নারীর গোপনাঙ্গে। এ ছাড়া ওই নারীর আচরণে আরও সন্দেহ বাড়লে তার পুরো শরীরে তল্লাশী চালায় গোয়েন্দা পুলিশের নারী সদস্যরা। পরে তার সারা শরীর থেকে ১২ গ্রাম কোকেন উদ্ধার করে পুলিশ। এর মধ্যে ব্লেসিংয়ের পায়ুপথ থেকে বের করা হয় তিন গ্রাম কোকেন।
তবে কোকেনের প্যাকেটগুলো বের করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে গোয়েন্দাদের। বিমানবন্দরের এক নারী গোয়েন্দা জানান, প্রথমে নাইজেরীয় ওই নারী তার যৌনাঙ্গ থেকে প্রথম ধাপে থাকা কোকেনের প্যাকেটগুলো বের করে দেন। পরে তাদের সন্দেহ আরও বাড়লে ব্লেসিংকে কড়া জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি তার পায়ুপথে ও যৌনাঙ্গের গভীরে জরায়ুর অগ্রভাগে আরও কোকেন আছে বলে স্বীকার করেন।
তিনি আরও জানান, ব্লেসিংয়ের যৌনাঙ্গের প্রথম ধাপেই প্যাকেটগুলো ছিল। কিন্ত তার হাঁটাচলার কারণে প্যাকেটগুলো জরায়ুর অগ্রভাগে পৌঁছে যায়। এ ছাড়া তিনি আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়ায় তার পায়ুপথে থাকা কোকেনগুলো বের করতে পারছেন না তারা।
আনন্দবাজার আরও জানিয়েছে, ব্লেসিংয়ের শরীরে থাকা কোকেনের প্যাকেটগুলো বের করতে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে গোয়েন্দাদের। নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরোর গোয়েন্দারা তার শরীর থেকে প্যাকেটগুলো বের করতে গিয়ে দেখেন, জরায়ুর অগ্রভাগে এমন একটা জায়গায় কোকেনের প্যাকেটগুলো রয়েছে যা বের করতে গেলে ওই নারীর মৃত্যু হতে পারে।
ব্লেসিংকে কলকাতার ভিআইপি রোডের পাশে একটি বেসকারি হাসপাতালে নিয়ে যান গোয়েন্দারা। সেখানে তার ট্রান্স-ভ্যাজাইনাল আল্ট্রা সনোগ্রাফি করানোর কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা বলেছেন, ‘কোকেনগুলো ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ওই নারীর যৌনাঙ্গে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্যাকেটগুলো পঁচে গিয়ে ফেঁটে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে ওই নারীর প্রাণও যেতে পারে।’
ডেভিড ব্লেসিংয়ের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন কলকাতা বিমানবন্দর গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান ধীমান ঘোষ। আপাতত ব্লেসিংকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্টে জানা গেছে, তিন বছর ধরে মুম্বাইয়ে বসবাস করা ব্লেসিং কয়েক বছর ধরে একটি বড় মাদক পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত। গোয়েন্দাদের ধারণা,এই চালানের পর আরও কয়েকটি চালান আনা-নেওয়া করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু পরীক্ষামূলক চালান নিয়ে যাওয়ার আগেই ধরা পড়েছেন তিনি।